মার্কেটিং-এর লক্ষ্য নির্ধারণের প্রয়োজনীয় ধাপসমূহ

এইচএসসি (বিএমটি) ভোকেশনাল - ই-মার্কেটিং - ই-মার্কেটিং কৌশল | | NCTB BOOK

মার্কেটিং হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে কোম্পানিগুলো ক্রেতাদের জন্য ভ্যালু সৃষ্টি করে এবং ক্রেতা সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে ক্রেতাদের সাথে সুদৃঢ় সম্পর্ক তৈরি করে । ই-মার্কেটিং বলতে ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী ক্রয়-বিক্রয়ের একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মকে বোঝায়। নিচে ই-মার্কেটিং-এর লক্ষ্য নির্ধারণের প্রয়োজনীয় ধাপসমূহ সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-

১. ই-মার্কেটিং-এর লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য সংজ্ঞায়িতকরণ (Defining digital marketing goals and objectives): ই-মার্কেটিং-এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সংজ্ঞায়িতকরণের মাধ্যমে সহজেই জানা যাবে যে, ই-মার্কেটিং দ্বারা তুমি কী অর্জন করতে চাও। তাই প্রথমেই ই-মার্কেটিং এর লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।

চিত্র: মার্কেটিং-এর লক্ষ্য নির্ধারণ

২. দর্শক বা গ্রাহক চিহ্নিতকরণ (Identifying audience or customers ) : ই-মার্কেটিং-এর লক্ষ্য ঠিক করার পর অবশ্যই তোমাকে তোমার সম্ভাব্য অডিয়েন্স বা গ্রাহকদের চিহ্নিত করতে হবে। কারা তোমার পণ্য ক্রয় করতে পারে তাদের বয়স, আয়, পছন্দ ইত্যাদি বিবেচনা করতে হবে। বাজার বিভক্তিকরণের কোন অংশে তুমি মার্কেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করবে তা নির্দিষ্ট করতে হবে। এজন্য তুমি Buyer Persona Template-এর সহযোগিতা নিতে পারো ।

৩. মার্কেট শেয়ার ও প্রতিযোগী চিহ্নিত করা (Identifying market share and competitors) : এপর্যায়ে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্লেষণ তথা প্রতিযোগীদের অবস্থান বিশ্লেষণ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ই-মার্কেটিং-এ বর্তমানে কে বা কোন প্রতিষ্ঠান তোমার প্রতিযোগী তাদের চিহ্নিত করতে হবে ও তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। প্রতিযোগীরা কত ভাগ বাজার দখল করে আছে আর তোমার কতটুকু বাজার দখল করার সামর্থ্য আছে তা জানতে হবে। প্রতিযোগী বিশ্লেষণে নিচের বিষয়গুলো অবশ্যই জানতে হবে-

* কোন ধরনের ক্রেতাদেরকে প্রতিযোগীরা টার্গেট করেছে?

* কোন ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেল ব্যবহার করছে? 

* কোন দিক থেকে তারা শক্তিশালী?

* তাদের দুর্বল দিক কোনটি?

৪. SWOT বিশ্লেষণ (SWOT analysis): মার্কেটিং বা ই- মার্কেটিং এর লক্ষ্য নির্ধারণে অবশ্যই তোমাকে তোমার শক্তি (Strength), দুর্বলতা (Weakness ), সুযোগ ( Opportunity) এবং হুমকি (Threat) বিবেচনা করতে হবে। SWOT বিশ্লেষণের মাধ্যমে তুমি তোমার কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে পারবে।

৫. ই-মার্কেটিং-এর জন্য বাজেট পরিকল্পনা (Budget planning for e-marketing): ই-মার্কেটিং এর লক্ষ্য নির্ধারণের সময় অবশ্যই তোমাকে তোমার আর্থিক সামর্থ্য তথা বাজেট সম্পর্কে পরিকল্পনা করতে হবে। তোমার বাজেটের ওপর ভিত্তি করেই তোমার ই-মার্কেটিং বিজনেস পরিচালিত হবে। এই বাজেটের ওপরই তোমার চ্যানেলের ব্যবহার নির্ভর করবে। সেই অনুযায়ী কৌশল অবলম্বন করতে হবে।

৬. ডিজিটাল চ্যানেল নির্বাচন (Selecting digital channel): একটি কন্টেন্ট তৈরির পূর্বে অবশ্যই তোমাকে ডিজিটাল চ্যানেল নিয়ে ভাবতে হবে। তোমার দর্শক, লক্ষ্য ও বাজেটের সার্বিক দিক বিশ্লেষণ করে ডিজিটাল চ্যানেল নির্দিষ্ট করতে হবে। যেমন— তোমার দর্শক বা গ্রাহকরা তরুণ হলে তাদেরকে অনুপ্রাণিত করার জন্য ডিজিটাল চ্যানেল হিসেবে ইনস্টাগ্রাম বা ফেসবুক ব্যহার করতে পারো।

৭. ডিজিটাল বা ই-মার্কেটিং এর কৌশল উন্নয়ন (Developing Digital or E-marketing Strategy): চ্যানেল নির্ধারণ করার পর তোমাকে অবশ্যই ই-মার্কেটিং-এর কৌশল ঠিক করতে হবে। প্রতিযোগীদের সার্বিক অবস্থা জানার পর এমনভাবে কৌশল নির্ধারণ করতে হবে, যাতে তুমি মার্কেট লিডার হতে পারো।

৮. মার্কেটিং ক্যালেন্ডার তৈরি (Create a marketing calendar ): যেকোনো লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য অর্জনে একটি বার্ষিক ক্যালেন্ডার তৈরি করা দরকার। এই ক্যালেন্ডার হলো লক্ষ্য অর্জনের একটি গাইডলাইন বা রোডম্যাপ। এরূপ ক্যালেন্ডারে পুরো বছরের কর্মপরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

৯. ফলাফল পরিমাপ এবং কে পি আই (Measuring results and key- performance indicator [KPI]): কখনোই ভাবতে নেই যে কাজ কমপ্লিট হয়ে গেছে। ই-মার্কেটিং-এর কার্যক্রম ২৪/৭/৩৬৫ দিন হিসেবে সার্বক্ষণিক চলমান। ক্রেতা ও কর্মচারী কর্মকর্তাদের নিকট হতে সবসময় ফিডব্যাক বা প্রতিক্রিয়া জানতে হবে। ই-মার্কেটিং-এর লক্ষ্য নির্ধারণের সর্বশেষ ধাপ হলো ফলাফল মূল্যায়ন। এজন্য KPI ব্যবহার করে ফলাফল পরিমাপ করা যেতে পারে। পরিশেষে বলা যায় যে, লক্ষ্য নির্ধারণে ওপরের ধাপগুলো যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। উল্লেখ্য যে, লক্ষ্য হওয়া উচিত SMART। আর এখানে SMART বলতে

S = Specific

M = Measurable A = Achievable

R = Relevant

T = Time bound.

 

▪️মার্কেট অডিট (Market Audit )

এক্ষেত্রে প্রথমেই আমাদেরকে আলাদা করে মার্কেট ও অডিট সম্পর্কে ধারণা অর্জন করতে হবে। মার্কেট (Market) : কোনো পণ্য বা সেবার বর্তমান ও সম্ভাব্য ক্রেতার সমষ্টিকে বাজার বলে ।

→ অডিট (Audit) : সাধারণ ভাষায়, অডিট হলো যেকোনো সত্তা বা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক তথ্যের একটি পরিদর্শন এবং স্বাধীন পরীক্ষা-নিরীক্ষা। অর্থাৎ, 'A' Audit is an independent examination of financial in formation of any entily."

→ মার্কেট অডিট (Market audit) : একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট মার্কেটকে ঘিরে পরিচালিত আর্থিক তথ্যের প্রকৃত হিসাব-নিকাশই হলো মার্কেট অডিট। এক্ষেত্রে মার্কেটের আকৃতি, আইনগত ও আর্থিক বিষয় যাচাই-বাছাই করা হয়।

Content added By
Promotion